সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ০৬:২১ পূর্বাহ্ন
আদালত প্রতিবেদক: নারী ও ১৩ বছরের বেশি বয়সের কিশোরীকে বৈবাহিক ধর্ষণের (ম্যারিটাল রেপ) অনুমোদন দেওয়া সংক্রান্ত আইন কেন সংবিধান পরিপন্থী হিসেবে বাতিল করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। রুলে দণ্ডবিধির ৩৭৫ ও ৩৭৬ নম্বর ধারা এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ৯(১) নম্বর ধারা বাতিল করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে। আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং স্বরাষ্ট্র সচিবকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন। বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), ব্র্যাক, নারীপক্ষ এবং মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের করা একটি রিট আবেদনের ওপর প্রাথমিক শুনানি শেষে এ আদেশ দেন আদালত। রিট আবেদনকারীপক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না, ব্যারিস্টার সারা হোসেন, ব্যারিস্টার জেনেফা জব্বার ও ব্যারিস্টার শারমীন আক্তার। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।
রিট আবেদনে বলা হয়, দণ্ডবিধির ৩৭৫ ও ৩৭৬ নম্বর ধারা এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ৯(১) নম্বর ধারা বিবাহিত নারী ও কিশোরীদের (তের বছরের ঊর্ধ্বে) স্বামী কর্তৃক ধর্ষণের বিচার প্রাপ্তির অধিকার ক্ষুণ্ন করে। এ কারণে এই ধারাগুলো বাতিল হওয়া দরকার।
গত ২৫ অক্টোবর টাঙ্গাইলে চৌদ্দ বছরের এক কিশোরী ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (ডিএমসিএইচ) ভর্তি হওয়ার পর যৌনাঙ্গে মাত্রাতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে মারা যায়। গত ২০ সেপ্টেম্বর ওই নারীর বিয়ে হয় সংযুক্ত আরব আমিরাত ফেরত ৩৪/৩৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তির সঙ্গে। বিয়ের প্রথম রাত থেকেই ওই কিশোরীর যৌনাঙ্গে প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। টাঙ্গাইলের ওই কিশোরীর মৃত্যুর ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ধর্ষণ সংক্রান্ত আইন সংস্কারের জন্য এবং বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করার নির্দেশনা চেয়ে রিট আবেদন করা হয়।
এর আগে স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে ধর্ষণ অর্থাৎ বৈবাহিক ধর্ষণকে (ম্যারিটাল রেপ) শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে আইন সংশোধনের দাবি জানিয়ে গত পহেলা নভেম্বর বেসরকারি টেলিভিশন ৭১’র সিনিয়র নিউজরুম এডিটর ওয়াহিদা আফসানার পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জাহিদ চৌধুরী জনি আইনি নোটিশ পাঠান।
আইন, স্বরাষ্ট্র এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক সচিব, আইন কমিশনের চেয়ারম্যান, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান, মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবরে এ নোটিশ পাঠানো হয়। নোটিশ পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে এ জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হবে বলে জানান আইনজীবী।